নিকলীর গোপীরায়ের গরুর হাট ক্রেতা-বিক্রেতাদের তীর্থস্থান


admin প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩, ৮:১২ অপরাহ্ন /
নিকলীর গোপীরায়ের গরুর হাট ক্রেতা-বিক্রেতাদের তীর্থস্থান

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:

কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার জারইতলা ইউনিয়নের সাজনপুর (আঠারবাড়ীয়া গোপীরায়ের) গরুর বাজারকে কেন্দ্র করে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে স্বার্থন্বেষী চক্র ও কুচক্রীমহল সক্রিয় হয়ে গ্রামের সচ্ছল হওয়ার পথে মানুষকে বাধাগ্রস্থ করছে।বিভিন্ন প্রকার ভয় দেখিয়ে ৪০ জন গরুর পাইকার কে জিম্মি করার পায়তারায় হাটছেন বিভিন্ন নামধারী ব্যক্তিরা।

সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায় বাজারটিতে এক সময় গ্রামের ১১ সমাজের লোকজনদের প্রচেষ্টায় সরকারি খাস ও ব্যক্তিগত জায়গায় কিছু গরু ক্রয় বিক্রয় শুরু করে।ক্রয় বিক্রয়ের সে কেন্দ্রটি প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে।বর্তমানে বাজারটি জেলার শ্রেষ্ঠ গরুর বাজারে পরিণত হয়েছে।সেই কারণে বিভিন্ন প্রতিকুলতা উপেক্ষা করে আশপাশের ৬/৭টি জেলা থেকে গরুর পাইকাররা গরু ক্রয় বিক্রয় করেন।

গরুর দাম যাই হোক না কেন ক্রেতার কাছ থেকে ২০০/- ও বিক্রেতার কাছ থেকে ২০০/- টাকা নিয়ে থাকে।এখানে গরু রাখা ও গরু বহন করার জন্য প্রায় ৫০০ থেকে ১০০০ হাজার লোক কর্ম করে থাকে।যার ফলে গ্রামটির দিকে থাকালে অর্থনৈতিক দৈন্যদশা কেটে উঠেছে বলে মনে হয়। এখন চল্লিশজন পাইকারের সাথে ১০০ শত গরুর পাইকার সম্মলিতভাবে প্রতি বুধবার সেখানে গরু-ক্রেতা-বিক্রেতার এক মিলন মেলায় পরিণত হয়ে যায়।

প্রতি বুধবার প্রায় ১০০০/১২০০টি গরু ক্রয় বিক্রয় হয় গ্রামীণ এই বাজার থেকে।স্থানীয় সাংবাদিক আলী জামশেদ ও তার চক্রের লোকজন কথিত দৈনিক পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাজারটি ঘিরে অসত্য তথ্য প্রচার করায় ১৪০ জন পাইকার এখন ধাপে ধাপে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।এই কারণে তাদেরকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।তারা যদি নির্ভয়ে বাজারটিতে গরু ক্রয়-বিক্রয় করতে পারলে হাজারো লোকের কর্মসস্থান করতে পারবে। অন্যথায় তারা বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করবে।

ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, আঠারবাড়ীয়া (গোপীরায়ের) বাজারটি আমাদের জন্য একটি নিরাপদ স্থান।এক কথায় বলা যায় এটি ক্রয় বিক্রয়ের একটি তীর্থস্থান।এখানে গরু বিক্রি করতে না দিলে আমাদের প্রায় ১,৫০০ লোক বেকার হয়ে যাবে।তাই তারা প্রশাসনের ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করছেন।

বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক জানান, বেশ কয়েক বছর যাবৎ সুনামের সাথে আমরা গরুর হাটটি পরিচালনা করে আসিতেছি।বাজারটি গ্রাম অঞ্চলে হলেও এখন জেলার শ্রেষ্ঠ গরুর হাটে রূপ নিয়েছে।নামধারী স্থানীয় সাংবাদিক আলী জামশেদ বাজার কমিটির কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল, কমিটি দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় গরুর হাটটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে।প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে তার বিচার দাবি করছি।

সাজনপুর (আঠারবাড়ীয়ায় গোপীরায়ের) বাজার গরুর হাটের ইজারাদার আলম মিয়া বলেন, সরকারি ইজারার মাধ্যমে হাটটি গ্রামের ১১টি সমাজ,মসজিদ-মাদ্রাসার সমন্বয়ে পরিচালিত হচ্ছে।গরুর হাটে আগত ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছ থেকে নামমাত্র ২০০ টাকা খাজনা নেয়া হয়।বাজারের আয়ের উৎস থেকে মাদ্রাসা শিক্ষকদের প্রতিমাসে বেতন দেয়া হয়।গ্রামের মসজিদের উন্নয়নে বাজার কমিটি আর্থিক সহযোগিতা করে আসছে।

২৭ নং আঠারবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আউয়াল জানান, প্রতি বুধবার পর্দা দিয়ে স্কুল মাঠকে আলাদা করে গরুর হাটটি বসানোর ফলে স্কুল পরিচালনায় কোন সমস্যা হয় না।বর্তমানে এ ব্যাপারে আমার কোন অভিযোগ নেই।

এ বিষয়ে নিকলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাকিলা পারভিন এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ কালে তিনি জানান, জারইতলা ইউনিয়নের সাজনপুর (আঠারবাড়ীয়া গোপীরায়ের) বাজারটিতে সাপ্তাহিক গরুর হাটের কারণে পাশ্ববর্তী স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রমে কোন ব্যাঘাত যেন না ঘটে সে বিষয়ে বাজার কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।এছাড়াও, দ্রুততম সময়ের মধ্যে হাটটির স্থানান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।